ঢাকা ক্রেডিট -এর ৬৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা-২০২৫ অনুষ্ঠিত

আপলোড সময় : ০৩-১০-২০২৫ ০৯:১৭:৩৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৪-১০-২০২৫ ০৫:৫৫:৪৮ অপরাহ্ন

৩ অক্টোবর শুক্রবার, ঢাকার ফার্মগেটে বটমলী হোম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, এর প্রেসিডেন্ট ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়ার সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মাইকেল জন গমেজের সঞ্চালনায় ৬৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।



বার্ষিক সাধারণ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি:’র চেয়ারম্যান প্রতাপ এ. গমেজ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও, ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ, তেজগাঁও হলি রোজারি চার্চের পাল-পুরোহিত জয়ন্ত এস. গমেজ, দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভস্ (কাককো) লি:’র চেয়ারম্যান টুটুল পিটার রড্রিক্স,  বাংলাদেশ ন্যাশনাল ওয়াইএমসিএ’র প্রেসিডেন্ট মার্সিয়া মিলি গমেজ, ঢাকা বিভাগীয় যুগ্ম-নিবন্ধক মো. কামরুজ্জামান, যুগ্ম-নিবন্ধক খোন্দকার হুমায়ূন কবীর, উপ-নিবন্ধক (প্রশাসন) মোছাম্মত নূর-ই-জান্নাত, জেলা সমবায় অফিসার এইচএম সহিদ-উজ-জামান, ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট পাপড়ি দেবী আরেং, ট্রেজারার সুকুমার লিনুস ক্রুজসহ সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যবৃন্দ। হাউজিং সোসাইটির পক্ষ থে‌কে আরও উপ‌স্থিত ছি‌লেন ভাইস চেয়ারম‌্যান মি, ডিউক পি, রোজা‌রিও, প‌রিচালক অর্থ ও প্রশাসন মি, জেমস ডি, রোজা‌রিও ও অন‌্যান‌্য কর্মকর্তাবৃন্দ।



সাধারণ সভায় সভাপতি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া ঢাকা ক্রেডিটের চলমান উন্নয়ন, কার্যক্রম এবং দিকনিদের্শনামূলক বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘বিগত বছর ঢাকা ক্রেডিটের মেঘা প্রকল্প ডিভাইন মার্সি হাসপাতালের শুভ উদ্বোধন হয়েছে। ইতিমধ্যে মানুষ এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সন্তুষ্ট। প্রতি মাসেই হাসপাতালের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করি, শিঘ্রই নিজস্ব আয় দিয়ে হাসপাতালের ব্যয় নির্বাহ হবে। সমবায়ীদের স্বাস্থ্যসেবায় অন্তভর্‚ক্ত করতে আমরা প্রায় ৬৫টি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি, আরো অনেক প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এই হাসপাতাল আমাদের সকলের হাসপাতাল, আশা করি সবাই এই হাসপাতালে সেবা নিবেন। আমাদের নার্সিং ইনস্টিটিউটে ৬০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে দুই ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অতি শিঘ্রই নার্সিং কলেজ এবং মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে ঢাকা ক্রেডিটের প্রকল্পগুলো থেকে আয় আসছে। বর্তমান বোর্ড নিরলস পরিশ্রম করে সমিতির জন্য কাজ করছে। এ ছাড়াও ঋণখেলাপীদের নিয়েও সমিতি কাজ করছে এবং ঋণখেলাপীর হার কমেছে। আপনাদের সহযোগিতায় আমরা বিগত একটি বছর সুন্দর ও সফলভাবে শেষ করেছি। আশা করি, বরাবরের মতো আগামীতেও আপনারা সহযোগিতা দিয়ে সমিতির উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবেন’ বলে সভাপতি মি. কোড়াইয়া।



মোছাম্মত নূর-ই-জান্নাত বলেন, ঢাকা ক্রেডিটের এখন বিশাল কর্মযজ্ঞ। বর্তমান বোর্ড কিছুদিন পর বিদায় নিবে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বোর্ড আসবে। আশা করি ঢাকা ক্রেডিটের এই উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘ঢাকা ক্রেডিট মাত্র দুই প্রোডাক্ট দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল, কিন্তু এখন ৮৬টি প্রোডাক্ট এবং প্রকল্প রয়েছে। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় গর্ব এখন ডিভাইন মার্সি হাসপাতাল লি:। ঢাকা ক্রেডিটের অনেক প্রজেক্ট রয়েছে যা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা ক্রেডিটের বোর্ড যেমন তাদের মেধা এবং ত্যাগ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে, তেমনি কর্মীরাও নিরলসভাবে ঢাকা ক্রেডিটের জন্য কাজ করছে।’



তারা আরো বলেন, ‘আজকে আমরা বার্ষিক সাধারণ সভা করছি, সেই সাথে ৭০ বছরের পদযাত্রায়ও অংশ নিচ্ছি। ঢাকা ক্রেডিট, হাউজিং সোসাইটিসহ খ্রিষ্টান প্রতিষ্ঠানগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা পথ চলছি, যে কারণে উন্নয়নধারা অব্যাহত রয়েছে। সম্মিলীতভাবে আমাদের বিনিয়োগ প্রয়োজন, যাতে করে উন্নয়নের মাত্রা আরো বেগবান হতে পারে। 

সমবায় অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ বলেন, ‘সমবায় প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা লাভবান হচ্ছি, তাই এই সেক্টরকে আমাদের সুন্দরভাবে সাজাতে হবে। সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের ঢাকা ক্রেডিটকে এগিয়ে নিতে হবে। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহীতা থাকতে হবে। তখনই স্বচ্ছতা থাকে এবং উন্নয়নের ধারা মসৃন হয়। নভেম্বরের ৭ তারিখ ঢাকা ক্রেডিটের নির্বাচন। আশা করি একটি সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে একটি যোগ্য বোর্ড এসে এই সমিতিকে পরিচালনা করবেন। ঢাকা ক্রেডিটের এত প্রজেক্ট এবং প্রোডাক্ট, পাশাপাশি ১২শ কর্মী, সুতরাং একটি দক্ষ এবং পেশাদার বোর্ড প্রয়োজন। আশা করি সদস্যরা তেমন বোর্ডই বেছে নেবেন’ বলেন তারা।

সমবায় অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ ঢাকা ক্রেডিটের প্রডাক্ট ও প্রকল্পগুলো নিয়ে প্রশংসা করে আরো বলেন, ‘ঢাকা ক্রেডিটের প্রোডাক্ট ও প্রকল্পগুলো সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। ঢাকা ক্রেডিটের প্রকল্পগুলো থেকে শুধু ঢাকা ক্রেডিট সেবা নিচ্ছে না, দেশের সকল মানুষই সেবা নিচ্ছে। ঢাকা ক্রেডিটের হাসপাতাল তো একটি বিশাল গর্বের জায়গা। আপনাদের কার্যক্রম দেখেই বোঝা যায় আপনাদের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহীতার সুন্দর জায়গা রয়েছে।’



বক্তব্য পর্বের পর সাধারণ সভার কার্যসূচি অনুসারে ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রতিবেদন পেশ ও অনুমোদন, বার্ষিক হিসাব বিবরণী পেশ ও অনুমোদন, নিরীক্ষা প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদন, প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা ও অনুমোদন, ক্রেডিট কমিটির প্রতিবেদন পেশ ও অনুমোদন, সুপারভাইজরি কমিটির প্রতিবেদন পেশ ও অনুমোদন, নতুন প্রস্তাবনা পেশ ও অনুমোদন, উপ-আইন সংশোধনী পেশ ও অনুমোদন এবং বিবিধ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এদিন সদস্যদের অংশগ্রহণে লটারী ড্র অনুষ্ঠিত হয়।

শেষে ভাইস-প্রেসিডেন্ট পাপড়ী দেবী আরেং ধন্যবাদ বক্তব্য দিয়ে বার্ষিক সাধারণ সভার সমাপ্তী ঘোষণা করেন।



উল্লেখ্য, ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ২৫ জন সদস্যের ৫০ টাকা মূলধন ফাদার চার্লস জে. ইয়াং সিএসসি ঢাকা ক্রেডিট প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ঢাকা ক্রেডিটের প্রায় ৪৭ হাজার সদস্য এবং পরিসম্পদ ১৫শ কোটি টাকা। ঢাকা ক্রেডিট বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। 

 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক: আগষ্টিন প্রতাপ গমেজ 
উপ-সম্পাদক: পেপিলন হেনরি পিউরীফিকেশন 

নির্বাহী সম্পাদক: সাগর সঞ্জীব কোড়াইয়া 

বার্তা সম্পাদক ও চিফ অব প্রোডাকশন : প্রবীর মন্ডল  

অফিস:

আর্চবিশপ মাইকেল ভবন
১১৬/১ মনিপুরীপাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ
ইমেল: info@neersangbad.com / neersangbad@gmail.com
ফোন: 0255027691-94, 09609006611