বাংলাদেশের গৃহায়ণ প্রকল্পের একটি গর্বিত নাম “দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিঃ” কথিত আছে “ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালু কণা, বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল।” হাউজিং সোসাইটির বেলাতেও যেন এই বাণীর বাস্তবতা প্রস্ফুটিত হয়েছে। ১৯৭৭ খ্রীষ্টাব্দের ১৪ এপ্রিল এই সোসাইটি মাত্র ২৭ জন সদস্য নিয়ে তার পথ চলার শুভ সুচনা করে। আজ ৪৭ বছরের পথপরিক্রমায় তা ২৭০০০ সদস্যের একটি সুবৃহৎ প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন সময়ে ঘাত প্রতিঘাত, নানা প্রতিবন্ধকতা এবং বৈরীতা জয় করে হাউজিং সোসাইটি এখন খ্রীষ্টান সমাজের গৃহ সমস্যা সমাধানের একটি গর্বিত ঠিকানা। সম্মানীত পরিচালনা কমিটির সেবকদের শ্রম, মেধা, নিষ্ঠা ও অব্যাহত কর্মময় তার ফলে সোসাইটি আজ ৩৫০০ কোটি টাকার সম্পদ পরিসম্পদের মালিক।
এই সুবিশাল অর্জনের শুভ সূচনা করে ছিলেন ২৭জন নিবেদিত প্রাণ সেবক তারা হলেন-
১। প্রয়াত আলেকজান্ডার রোজারিও, ২। প্রয়াত আরনল্ড সি. গোমেজ, ৩। প্রয়াত ডানিয়েল কোড়াইয়া, ৪। মিসেস মল্লিকা কোড়াইয়া, ৫। প্রয়াত ইগ্নেসিয়াস পিউরীফিকেশন, ৬। প্রয়াত পিটার হালদার, ৭। প্রয়াত খ্রীষ্টফার গমেজ, ৮। প্রয়াত পারুল ডরোথি গমেজ, ৯। মি. বিজয় জেম্স রোজারিও, ১০। প্রয়াত প্যাট্রিক গমেজ, ১১। প্রয়াত রবিন রোজারিও, ১২। মি. জর্জ সুব্রত পালমা, ১৩। প্রয়াত জন ফেবিয়ান রড্রিক্স, ১৪। মি. সিলভেষ্টার রিবেরু, ১৫। মি. জন গমেজ (সওদাগর) ১৬। প্রয়াত সিরিল রোজারিও, ১৭। মি. সুনীল বেঞ্জামিন গমেজ, ১৮। প্রয়াত সুনীলা স্কলাষ্টিকা কস্তা, ১৯। প্রয়াত পিটার এম. কস্তা, ২০। প্রয়াত জন রোজারিও, ২১। প্রয়াত গাব্রিয়েল মানিক গমেজ, ২২। প্রয়াত এন্থনী কোড়াইয়া, ২৩। মি. সুভাস সেলেষ্টিন রোজারিও, ২৪। প্রয়াত গাব্রিয়েল রিবেরু, ২৫। মি. পিটার পল গমেজ, ২৬। প্রয়াত এন্ড্রু ডি’ কস্তা, ২৭। মি. যোসেফ মধু।
বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটি যখন ২০১২ খ্রীষ্টাব্দে দায়িত্ব গ্রহণ করে এর পূর্বে কখনোই সম্মানীত প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের জন্য উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিষদ ২০১৩ এবং ২০১৭ খ্রীষ্টাব্দে আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মানীত প্রতিষ্ঠাতা সদস্য-সদস্যাদের বিশেষ ভাবে স্মরণ করে ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। এমনকি বেশ কয়েকজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মরণোত্তের সম্মাননা স্বর্ণপদকে ভূষিত করে। এজন্য সোসাইটির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরীফিকেশন একমাত্র ব্যক্তি যিনি বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের চিরকৃতজ্ঞতা করে স্মরণ করেছেন। তাদের স্মৃতি ফলক সোসাইটিতে স্থায়ীভাবে স্থাপন করেছেন। যাতে করে ভবিষ্যত প্রজন্ম সোসাইটির ইতিহাস অবহিত হতে পারে। চেয়ারম্যানের প্রতি রইলো গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
গভীর শ্রদ্ধা জানাই পরম শ্রদ্ধাভাজন প্রয়াত আর্চবিশপ মাইকেল রোজারিওর চরন কমলে। তিনি তাঁর বিচক্ষনতা, উদারতা ও মহানুভবতা দ্বারা এই সোসাইটির ঊষালগ্নে প্রধান পৃষ্ঠপোশক হিসেবে উদার চিত্তে সোসাইটিকে সমৃদ্ধ করার জন্য অনন্য অবদান রেখেছেন। তাঁর সহায়তা সোসাইটির প্রথম দিকের প্রকল্প বাস্তবায়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে। আজ তাঁর সেই মহানুভবতার প্রতি সম্মান জানিয়ে সোসাইটির প্রধান কার্যালয় আর্চবিশপ মাইকেল ভবন নামে নামাঙ্কিত। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার চিরকল্যান কামনা করছি।
প্রয়াত আর্চবিশপ মাইকেল রোজারিও
এই প্রতিষ্ঠাতা সদস্যগণ আমাদের পথ প্রদর্শক। তাঁদের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা। অরুনোদয়ের হে মহান সেবক-সেবিকা, তোমরা ছিলে, তোমরা আছ, তোমরা থাকবে আমাদের হৃদয় মন্দিরে-অক্ষয় অমর হয়ে যুগ-যুগান্তরে।
লেখক: যোসেফ রোজারিও
নিউজটি আপডেট করেছেন : Admin