
এর আগের দিন শনিবার বিকাল থেকে খ্রীষ্টভক্তবৃন্দ জয়পুর গ্রামে আসতে থাকে। বিকালে বিশেষ আলোচনা ও সন্ধ্যায় বিভিন্ন গ্রামের কির্তনদল তাদের কির্ত নপরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে খ্রীষ্টযাগের পর মা মারিয়ার মুর্তি নিয়ে গ্রামের ভিতর প্রশেসন করেন। উল্লেখ্য যে, খুলনা ধর্মপ্রদেশের কেন্দ্রীয় তীর্থস্থান হিসাবে বিবেচিত।

ভবরপাড়াা ও কার্পাসডাঙ্গা, ধর্মপ্লীর খ্রিষ্টক্তগণ ধন্যা কুমারী মা মারীয়ার প্রতি গভীর বিশ্বাস, ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রদান করে। ফাঃ কুরুনির সময় একবার অত্র এলাকায় দেখা দিল ভয়াবহ মহামারী, কলেরা, দুর্ভিক্ষ। এই মৃত্যুগ্রাসী ভয়াল পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য খ্রীষ্টভক্তগণ রোজারিমালা আবৃত্তি করে মা-মারীয়ার মূর্তি নিয়ে শোভাযাত্রা করে গ্রাম প্রদক্ষিণ করেছিল এবং সে বছর ঐ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেয়েছিল।

কথিত আছে অনেক বিবাহিত নিঃসন্তান মেয়েদেরকে স্বামী দ্বারা অত্যাচারিত এবং পাড়া প্রতিবেশীদের নিকট থেকে অভিশপ্ত ও অনিষ্টের সন্তানের মা গুঞ্জনা শুনতে হতো। কিন্তু মা মারীয়ার নিকট প্রার্থনার ফলে তারা সন্তানের মা হতে পেরেছিলেন। পার্শ্ববর্তী রানাবন্দ (বর্তমান কৃষ্ণনগর ধর্মপল্লীর অন্তর্গত) ধর্মপল্লীতে তারা প্রতি বৎসর মা মারীয়ার প্রতি ভক্তি এবং কৃতজ্ঞতা দেখানোর জন্য তীর্থ করত। কিন্তু ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশ বিভক্তের ফলে তারা আর এই তীর্থ করতে পারতো না। পরবর্তিতে ফাঃ আন্তনিও আলবের্তন পালকীয় দায়িত্ব নিয়ে ১৯৫৪ খ্রীষ্টাব্দে জয়পুর উপকেন্দ্রে মাটির তৈরী গীর্জার সংস্কার করে ইটের গীর্জা নির্মাণ করেন। ভক্তজনের এই বিশ্বাসের কথা জেনে নিজ দেশ ইটালি থেকে (রানাবন্দ ধর্মপল্লী মা-মারীয়ার মূর্তির অনুকরণে) একটি মা-মারীয়ার মূর্তি আনেন। ১৯৫৫/৫৬ খ্রীষ্টাব্দে ভরপাড়া ধর্মপল্লী হতে কীর্তন ও শোভাযাত্রা করে জয়পুরের গীর্জায় মূর্তিটি স্থাপন করেন, তখন থেকে এখনও পর্যন্ত অত্র এলাকার ভক্তগণ ৮ই ডিসেম্বর জয়পুর ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতার উপহার বা মানত উৎসর্গ করে মা-মারীয়ার জয়গান তীর্থ করেন, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতার উপহার বা মানত উৎসর্গ করে মা-মারীয়ার জয়গান করে থাকে।