আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি পূণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিসের স্বাস্থ্য গত ২৪ ঘণ্টায় অবনতি হয়েছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে পোপ ফ্রান্সিসের অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’। রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
একাধিক শারীরিক জটিলতার পাশাপাশি ফুসফুসের সংক্রমণের রয়েছে তাঁর। তাই তাঁকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভর্তি করা হয় ইতালির রোমের জেমেল্লি হাসপাতালে। পরবর্তীতে তার উভয় ফুসফুসে নিউমোনিয়া ধরা পড়ে।
শনিবার এক বিবৃতিতে ভ্যাটিকান জানায়, পোপ ফ্রান্সিস ‘দীর্ঘদিন ধরে হাঁপানির মতো শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। গতকালের চেয়ে তার অবস্থা আরও অবনতি হয়েছে। ‘মহান ধর্মগুরুর অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। তিনি বিপদমুক্ত নন।’
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে বেশ কয়েক দিন ধরে ব্রঙ্কাইটিসের লক্ষণ ছিল পোপের। এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি ভ্যাটিকান এক বিবৃততে জানায়, পোপ ফ্রান্সিসকে ‘জটিল শারীরিক অবস্থার’ কারণে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। যত দিন প্রয়োজন, তত দিন হাসপাতালে থাকবেন তিনি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পোপের শ্বাসনালিতে একাধিক জীবাণু সংক্রমণ (পলিমাইক্রোবিয়াল ইনফেকশন) হওয়ায় তার চিকিৎসায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। ভ্যাটিকান আরও জানায়, স্থিতিশীল অবস্থায় পোপের ‘নির্ধারিত চিকিৎসা চলছে’ আর তার শরীরে জ্বর নেই।
ভ্যাটিকান আরও জানায়, পোপ ফ্রান্সিস সজাগ রয়েছেন এবং দিনের বেশির ভাগ সময় কেবলমাত্র চেয়ারেই কাটিয়েছেন, যদিও আগের দিনের তুলনায় বেশি কষ্ট পাচ্ছেন।
পোপ চান তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে খোলাখুলি জানানো হোক, তাই ভ্যাটিকান প্রতিদিন তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করছে। তবে সাম্প্রতিক বিবৃতি সবচেয়ে স্পষ্ট এবং বিস্তারিত।
রোমের জেমেলি হাসপাতাল
মাত্র একদিন আগেও চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তিনি ওষুধে সাড়া দিচ্ছেন, তবে তাঁর অবস্থা অত্যন্ত জটিল। চিকিৎসকদের মতে, সামান্য পরিবর্তনও তাঁর ‘নাজুক ভারসাম্য’ বিঘ্নিত করতে পারে।
ছোটবেলায় প্লুরিসি (ফুসফুসের আবরণে প্রদাহ) হওয়ার কারণে তিনি ফুসফুসের সংক্রমণের প্রতি বিশেষভাবে সংবেদনশীল। ২১ বছর বয়সে তাঁর একটি ফুসফুসের অংশ কেটে ফেলা হয়েছিল।
এদিকে পোপের সম্ভাব্য পদত্যাগ সম্পর্কে কথা বলেছেন কার্ডিনাল জ্যঁ মার্ক অ্যাভেলিন ও কার্ডিনাল হুয়ান যোসে ওমেলাও। কার্ডিনাল ওমেলা গির্জার ধারাবাহিকতার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘পোপ বদলায়, আমরা বিশপরা বদলাই, প্যারিসের পুরোহিতরা বদলায়, সবাই বদলায়। কিন্তু ট্রেনটি চলতেই থাকে।’ তবে পোপ ফ্রান্সিস সম্প্রতি স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন, যদি স্বাস্থ্যগত সমস্যা যথেষ্ট গুরুতর হয়ে ওঠে তবে তিনি পদত্যাগ করার কথা বিবেচনা করবেন।