
ঢাকা শহরের প্রায় উত্তর সীমান্তের বৃহত্তর মিরপুর এলাকার বড়বাগে প্রতিষ্ঠিত সেন্ট তেরেজা স্কুল মিরপুর কাথলিক গির্জার একটি প্রতিষ্ঠান। গুণগত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের শিক্ষা কমিটির নিবিড় তত্ত্বাবধানে আজ শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলেছে সেন্ট তেরেজা স্কুল। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ১লা জুলাই, মাত্র ৭৫ জন ছাত্র ছাত্রী নিয়ে তার পথ চলার শুভ সুচনা করেন প্রধান স্বপ্নদ্রষ্টা ফাদার জন পাওলো গুয়ালজেত্তি, পিমে সহ প্রয়াত পল বার্ণাবাস রোজারিও, প্রয়াত মি: পল শিকদার, প্রয়াত মি: আগষ্টিন পালমা, ডাঃ রবার্ট ডি’ ক্রুজ, মিসেস ফুলকুমারী কোড়াইয়া, মি: সুজিত ফলিয়া, মি: আশিষ বালা। মিরপুর এলাকায় একটি আদর্শ খ্রীষ্টান স্কুলের প্রয়োজন তাগিদ অনুভব ক’রে পিমে মিশনারীগণ ধর্মপল্লী পরিচালনার পাশাপাশি স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। স্কুল প্রতিষ্ঠার এডহক কমিটির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্কুলের জন্য বড়বাগে লুইজিনা সিষ্টার বাড়ির সাথে টিনসেডের একটি বাড়ি খুজে বের করেন যা বর্তমানে ৬০ ফিট রাস্তা বিদ্যমান। সেখানে মাত্র ৬ মাসের জন্য স্কুলটির অবস্থান ছিল। ২০০০ খ্রীষ্টাব্দে জানুয়ারী মাসে স্কুলটি স্থান্তাস্তর করা হয় ৭৮, বড়বাগ, মিরপুর-২, ঢাকা এই ঠিকানায় একটি বিল্ডিং বাড়িতে। স্কুলটি সঠিকভাবে পরিচালনা ও সঠিক তত্ত্বাবধােনর জন্য ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা করা হয়।বর্তমানে সেন্ট তেরেজা স্কুলটি বৃহত্তর মিরপুর এলাকায় একটি আদর্শ মিশনারী স্কুল হিসেবে আত্মপ্রকাশ ক’রে সুনামের সাথে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য শিক্ষার আলো ছরিয়ে চলেছে।
স্কুলটির প্রতিষ্ঠা লগ্নে বলিষ্ঠ সাহস ও আন্তরিক সহযোগিতা জুগিয়েছিলেন ফাদার লুইজি পিনোস, পিমে। তাই এই চত্তরের নামকরণ করা হয়েছে ফাদার পিনোস সেন্টার।
১৯৯৯ খ্রীষ্টাব্দ হতে ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত ৭,৮১৫ জন ছাত্র ছাত্রী সেন্ট তেরেজা স্কুলে লেখাপড়া করে অনেকেই আজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং অনেকেই দেশে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করছে। ১৯৯৯ খ্রীষ্টাব্দ হতে ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত মোট ৬৯ জন শিক্ষক/শিক্ষিকা সেন্ট তেরেজা স্কুলে বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ছাত্র ছাত্রীদের মানুষ গড়ার কাজে অত্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন এবং করে যাচ্ছেন।

সেন্ট তেরেজা স্কুল- প্রথমে প্লে থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত একটি প্রাইমারী স্কুল হিসেবেই এর পরিচিতি পেয়েছে। প্রতিপালিকা’র (তেরেজা- লিটল ফ্লাওয়ার) নামের মতোই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি যেন একটি ক্ষুদ্র পুষ্পের সৌন্দর্য্যকে ধারণ করতে পেরেছে, ২৫ বছর যাবৎ অনেক ছোট ছোট শিশু ও অভিভাবকদের আকৃষ্ট করতে পেরেছে, এবং এর সংস্পর্শে এসে জ্ঞান ও শিক্ষার আলোকে নিজেদের সৌন্দর্য্যরে বিকাশ ঘটিয়েছে। স্কুলটিতে অভিজ্ঞ ও দক্ষ প্রথম প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা শিক্ষাদান পরিচালিত হচ্ছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির যুগোপযোগী পরিকল্পনা, পরিচালনা ও শিক্ষাদান সম্পর্কিত সার্বিক কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-মন্ডলী, সেবাদানকারী, পরিচালক মন্ডলী ও অভিভাবকবৃন্দের মধ্যে মাত্র সেবা গ্রহণ ও সেবা দানের একটি নেহাত পরিচিতির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি বরং স্থানীয়ভাবে নিজেদের মধ্যে অনেক দিক দিয়ে সম্পর্কের বন্ধন এনে দিয়েছে।
আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে রজত জয়ন্তীর শুভ অনুষ্ঠানে নিজেদেরকে খুঁজে পায় প্রাক্তন ও বর্তমান সকলের একটি পারষ্পরিক আনন্দঘন মিলন-বন্ধনে।