যা ভবিষ্যতে মহাকাশে কাঠের উপাদান ব্যবহারের সম্ভাবনা পরীক্ষা করবে। এই স্যাটেলাইটটির নাম ‘লিগনোস্যাট’, যা জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় এবং গৃহনির্মাণ প্রতিষ্ঠান সুমিতোমো ফরেস্ট্রি যৌথভাবে তৈরি করেছে। স্যাটেলাইটটি ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৃথিবীর কক্ষপথে অবস্থান করবে এবং মহাকাশের পরিবেশে কাঠের টেকসইতা পরীক্ষা করবে।
লিগনোস্যাট পাঠানোর উদ্দেশ্য হলো, ভবিষ্যতে চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহে কাঠের ব্যবহার সৃষ্টির সম্ভাবনা যাচাই করা। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন যে, এগুলোতে কাঠ দিয়ে ভবন এবং ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে, কারণ কাঠ মহাকাশে বেশ টেকসই। মহাকাশে অক্সিজেন বা পানি না থাকায় কাঠ পচে যাওয়ার বা স্ফীত হওয়ার সম্ভাবনা কম। এর পরিবেশগত প্রভাবও কম, যা পৃথিবীতে প্রচলিত ধাতব স্যাটেলাইটের তুলনায় অনেক বেশি সুবিধাজনক। ধাতব স্যাটেলাইটগুলি যখন মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরে আসে, তখন তারা অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড কণা উৎপন্ন করে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে কাঠের স্যাটেলাইট এসব ঝুঁকি এড়াতে পারে, এবং এটি ভবিষ্যতে মহাকাশে ব্যবহৃত ধাতব স্যাটেলাইটের প্রতিস্থাপন হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
লিগনোস্যাট স্যাটেলাইটটি তৈরি করতে ব্যবহৃত কাঠের প্রকার ছিল হোনোকি ম্যাগনোলিয়া, যা জাপানের একটি ঐতিহ্যবাহী গাছ। এই গাছের কাঠ বিশেষভাবে শক্তিশালী এবং মহাকাশযানের জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছে। স্যাটেলাইটটির মাধ্যমে কাঠের সেমিকন্ডাক্টরের ওপর বিকিরণের প্রভাব, কাঠের শক্তি এবং পরিবেশগত পারফরম্যান্স পরিমাপ করা হবে।
জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী কোজি মুরাতা জানিয়েছেন, উনিশ শতকের প্রথম দিকে কাঠের তৈরি উড়োজাহাজ তৈরি করা হতো, সুতরাং কাঠের তৈরি স্যাটেলাইটের সম্ভাবনাও অনেক বেশি। এই পরীক্ষা মহাকাশ শিল্পে কাঠের ব্যবহারের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে এবং ভবিষ্যতে চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহে কাঠের মাধ্যমে বসতি স্থাপন বা গৃহনির্মাণে সহায়তা করতে পারে। সুমিটোমো ফরেস্ট্রির সুকুবা রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী, কেনজি কারিয়া বলেন, কাঠের সেমিকন্ডাক্টরের বিকিরণ কমানোর ক্ষমতাও খতিয়ে দেখা হবে, যা ভবিষ্যতে ডেটা সেন্টার নির্মাণে কাজে আসতে পারে।
লিগনোস্যাট মহাকাশে থাকাকালীন কাঠের প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং টেকসইতা সম্পর্কিত বিভিন্ন পরীক্ষা করা হবে। স্যাটেলাইটটি পৃথিবীর কক্ষপথে ছয় মাস অবস্থান করবে এবং এই সময়ের মধ্যে কাঠের অবস্থান এবং কার্যক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করা হবে, যা কাঠের মহাকাশে ব্যবহারের নতুন সম্ভাবনা এবং প্রযুক্তির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সূত্রঃ নিউজ ১৮
নিউজটি আপডেট করেছেন : Admin